১. গ্যাস্ট্রাইটিস: সাধারণত বেশি মসলা ও তেলযুক্ত খাবার খেলে, খাওয়ায় অনিয়ম করলে বুক জ্বালা আর অম্বল হয়। এতে পেটে বাড়তি এসিড তৈরি হয় আর তা থেকে পেট বা বুকের মাঝখানে একটা অস্বস্তি বা জ্বালার ভাব হয়। গলা ও পেট জ্বালা করে এবং পেটে ব্যথাসহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। সময়মত এ রোগের চিকিৎসা করা না হলে পাকস্থলি ও অস্ত্রে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। তখন একে গ্যাস্ট্রিক আলসার বলে। নিয়মিতভাবে কম মসলা ও কম তেলযুক্ত খাবার খাওয়া এবং সময়মত খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস করলে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
২. আমাশয়: আমাশয় আমাদের দেশে একটি অতি পরিচিত রোগ। দুই ধরনের আমাশয় দেখা যায়। যথা-
(ক) অ্যামিবিক আমাশয়: প্রধানত এন্টামিবা নামে এক প্রকার এককোষী প্রাণী মানুষের অস্ত্রে প্রবেশ করলে এ
ধরনের রোগ দেখা দেয়। এ রোগের উপসর্গগুলো হলো- তলপেটে ব্যথা, মলের সাথে রক্ত বা শ্লেষ্মা বের হওয়া। নলকূপের পানি বা ফুটানো পানি পান, পানি ও শাকসবজি যাতে দূষিত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা। মাছি, আরশোলা থেকে খাদ্যবস্তুকে রক্ষার মাধ্যমে এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। তবে এ রোগে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করা প্রয়োজন।
(খ) ব্যাসিলারি আমাশয় সিগেলা নামের এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া অন্ত্রকে আক্রমণ করলে এ ধরনের
আমাশয় হয়। জীবাণু বৃহদন্ত্রের ঝিল্লিকে আক্রমণ করে। ফলে বারবার পায়খানা হয় এবং পায়খানার সাথে শ্লেষ্যা বের হয়। অনেক সময় এর সাথে রক্তও যায়। এজন্য এ রোগকে রক্ত আমাশয় বলে। এ রোগকে অবহেলা করা ঠিক নয়। ডাক্তারের পরামর্শে চিকিৎসা করা প্রয়োজন। সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
৩. কোষ্ঠকাঠিন্য: কোষ্ঠকাঠিন্য প্রকৃতপক্ষে কোনো রোগ নয়। বিভিন্ন কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। যেমন- পৌষ্টিকনালির মধ্য দিয়ে খাদ্যবস্তুর চলন ধীর হওয়া, কাঁচা ফলমূল ও শাকসবজি না খাওয়া, পায়খানার বেগ পেলে সংঙ্গে সংঙ্গে পায়খানায় না বসা ইত্যাদি। নিয়মিত মল ত্যাগের অভ্যাস গড়ে তোলা, নিয়মিত শাকসবজি খাওয়া, ফলমূল ও আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ার মাধ্যমে এ অসুবিধা দূর করা যায়।
কাজ: শিক্ষার্থীরা খাতায় পরিপাকতন্ত্রের বিভিন্ন রোগের নাম লিখবে। দলে বিভক্ত হয়ে শিক্ষার্থী কী কারণে এ রোগগুলো হয় তা খাতায় লিপিবদ্ধ করবে। প্রতিটি দলের একজন করে তা শ্রেণিতে উপস্থাপন করবে। অন্যরা বিষয়গুলো মিলিয়ে নিবে। |
পরিপাকতন্ত্রের যত্ন
১। দাঁত: প্রতিবার খাওয়ার পর দাঁত ব্রাশ করা ও পরিষ্কার করা উচিত। দাঁতের ফাঁকে খাবারের কণা আটকে থাকলে তা পচে মুখে দুর্গন্ধ হয়। দাঁতের ক্ষয় হয়। খুব বেশি মিষ্টি খেতে নেই। মিষ্টি দাঁত ক্ষয়ের জন্য দায়ী।
২। খাদ্যবস্তু: খাদ্যবস্তু পরিষ্কার ও সুসিদ্ধ হওয়া উচিত। বাসি পচা খাবার খাওয়া উচিত নয়। আঙুলের নখছোটো রাখা এবং খাওয়ার আগে থালাবাটি ও হাত অবশ্যই পরিষ্কার করে নিতে হবে।
৩। খাওয়া: নিয়মিত নির্দিষ্ট সময়ে খাওয়া উচিত। একসাথে বেশি খাবার খাবে না। সব সময় সুষম খাবার খাবে। খাওয়ার কিছুক্ষণ পর প্রচুর পানি খাবে। সব সময় পানি ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে খাবে। খাবার ধীরে ধীরে ভালো করে চিবিয়ে খাবে। অধিক মসলা ও তেলযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত নয়।
নতুন শব্দ: কোষ্ঠ্যকাঠিন্য, ব্যাসিলারি আমাশয় ও অ্যামিবিক আমাশয়